ওয়াশিংটন সুন্দর নামের মতো সুন্দর থাকতে পারলেন না। তাকে ছুঁয়ে গেছে রাজ্যের হতাশা। যে হতাশা গ্রাস করেছে গোটা ভারত ক্রিকেট দলকে। অ্যাজাজ প্যাটেলের স্পিনে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরলেন সুন্দর, মাঠে নিউজিল্যান্ড ফেটে পড়ল উল্লাসে। পড়ারই কথা। এমন এক ঝলমলে দুপুর রোজ রোজ আসে না। ক্রিকেটের দেড়শ বছরের ইতিহাসেই তো এমনটি করতে পারেনি নিউজিল্যান্ডের আর কোনো দল!
ভারতের জার্সির রঙ নীল, কিউইদের কালো। দুটিকে একসঙ্গে একটা মেটাফোরিক অবয়ব দেওয়া যায়। ভারতকে বেদনার নীলে ডুবিয়ে আঁধারের কালো দূর করে আলো আনল নিউজিল্যান্ড। ওয়াংখেড়ে টেস্টে ভারতকে ২৫ রানে হারিয়ে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিল কিউইরা। ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হলো ভারত। তারচেয়ে বড় তথ্য, তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ঘরের মাঠে এর আগে কখনোই ধবলধোলাই হয়নি ভারত!
ওয়াংখেড়ে টেস্টের প্রথম ইনিংসে আগে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড তোলে ২৩৫ রান। ভারত ২৬৩ রান সংগ্রহ করে পায় ২৮ রানের লিড। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭৪ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। ভারত অলআউট হয় ১২১ রানে।
তাতে প্রথম কোন দল হিসেবে নিউজিল্যান্ডই তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ভারতকে তাদের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করল। এর আগে ভারত একবার টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়শ হয়েছিল ২০০০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। কিন্তু, তা ছিল দুই ম্যাচের সিরিজ। তিন ম্যাচের সিরিজে কিউইরা ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে নিজেদের সফলতার স্বাক্ষর রাখল।
বেঙ্গালুরু ও পুনেতে প্রথম দুই টেস্ট জিতে ইতিহাস আগেই রচিত করেছে নিউজিল্যান্ড। শেষ টেস্টে লক্ষ্য ছিল ইতিহাসের পরিসর বাড়ানোর। ব্ল্যাকক্যাপরা সেদিকেই যাচ্ছিল। ওয়াংখেড়েতে ভারতের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৪৭ রান। ২৯ রান তুলতেই কিউইরা ভেঙে দেয় স্বাগতিকদের মেরুদণ্ড। রোহিত-কোহলিদের মতো তারকায় ঠাসা ব্যাটিং লাইনআপ স্কোরবোর্ডে ২৯ রান তুলতেই হারায় পাঁচ উইকেট। কিউইদের জয় তখন মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার।ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা। টেস্ট ক্রিকেট আরও বেশি অনিশ্চিত। ভঙ্গুর দলটাকেই টেনে তোলার দায়িত্ব নিলেন ঋষভ পন্ত। খেললেন ৫৭ বলে ৬৪ রানের ইনিংস। একদিকে যখন উইকেট পড়ছিল, ঋষভের দর্শন তখন সহজ—আক্রমণ! টন ব্লান্ডেলের ক্যাচ বানিয়ে তাকে থামালেন প্যাটেল। এরপরই খেলায় ফের উত্তেজনা। ভারতের প্রয়োজন ৩০ রান, কিউইদের তিন উইকেট।শেষ দিকে ভারতীয় লোয়ার অর্ডার আর পেরে ওঠেনি। গ্লেন ফিলিপস রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে বিদায় করলে ভারতের হার সময়ের ব্যাপার হয়ে ওঠে। সেটি আর আটকাতে পারেনি ব্লু আর্মিরা।